আমারা যারা কবুতর পালি তাদের কাছে এর ডিম দেওয়া ও তা থেকে বাচ্চা ফুটা একটা বিশাল খুশির খবর বহন করে। আর যদি সেটা যদি প্রথমবার হয়, খুশিটা আরও দিগুন বেড়ে যাই। আর এই খুশির অভিজ্ঞতা শুধু সেই জন জানে যার ক্ষেত্রে এই ঘটনা ঘটে থাকে। আর সেটা বাণিজ্যিক চিন্তা থেকে হোক বা সখের বসে হোক। তার কোন বাতিক্রম হয় না।কিন্তু যদি ঘটনাটা উল্টো হয়, তাহলে তার দুখটাও কোন অংশে কম হইনা। আর এই দুঃখজনক অভিজ্ঞতা কম বেশি সকল খামারিকেই নিতে হয়। আর এটা অধিকাংশ ঘটে থাকে সঠিক জ্ঞানের অভাবে। আর এই সমস্যা থেকে অনায়াসে বের হয়ে আসতে পারবেন যদি আপানার জানা থাকে যে আপনাকে কি করতে হবে।এখন আসুন আমরা এই ব্যাপারে একটু বিস্তারিত জেনে নেই, যে আমাদের দায়িত্বটা কি? আর কি করা উচিৎ??
অনেক কারনে উর্বর বা জমা ডিম ফুটে না। যখন কোন ভ্রুন বেড়ে উঠার আগেই তা মারা যাই তখন তাকে addled বলে। আর addled ডিম সাধারণত ভিটামিন ,প্রটিন ও মিনারেলস এর অভাবে হয়। আর একটা এই কারনে হয় যখন inbreeding হয় অর্থাৎ একই রক্তসুত্রের জোড়া যখন মিলন করে তখন এই ঘটনা ঘটতে পারে। আর ভ্রুন যদি এভাবে মারা যাই তাকে শেল বা
খোসার ভিতর মৃত dead in shell বলে। এজন্য সাধারণত
শেল মৃত সাধারণত খুব শুষ্ক নীড় বা নেস্ত বাটি, যার কারনে ডিম তার আদ্রতা হারাই। আর এজন্য ভিতরে থাকা বাচ্চা দুর্বল হয়ে শেল ভেঙ্গে বের হয়ে আসতে পারে না। যাহোক, যদি parents bird কে যদি গোসল করার সুযোগ দেওয়া হয় তাহলে তারা গোসল সেরে ডিমে বসে ফলে সেটা ডিমের আদ্রতা বজাই রাখতে সাহায্য করে। আবার অনেক ডিম ব্যাকটেরিয়া আক্রান্ত হয়ে শেলের ভিতর চিড় ধরে যা ব্যাকটেরিয়া শোষণ করে। নীড় বা নেস্ত বাটিতে যদি পর্যাপ্ত নরম কিছু দেওয়া না হয় বা কবুতর যদি ভয়ে ভিত হয়ে থাকে বা যদি কবুতর কে রাগানো বা বেশি বিরক্ত করা হয়। আরেকটি সম্ভাব্য কারন হল কোন রাসায়নিক স্প্রে,কীটনাশক স্প্রে, বা অন্য কোন প্রয়োজনীয় ক্ষতিকর উপাদান যা কবুতরের খাবার বা পানির সংস্পর্শে আসে। ডিমের কুসুমে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ। অনেক সময় ভ্রুন ধারন করেও incubation সময়ই
মারা যাই, আর অনেক খামারি এটা ধখে ধারনা করে যে সাল্মনিলার কারনেই এটা ঘটেছে, আসলে যদি সব কারন একসঙ্গে করা হয়ই তবে সাল্মনিলার কারন হবে মাত্র ৫% ভাগ। কবুতর যদি সাল্মনিলা আক্রান্ত হয় তবে সেটা মাদি কবুতরের জরায়ুর মাধমে ব্যাকটেরিয়া খুব দ্রুত ডিমের ভিতর ভ্রুন এর মৃত্যু ঘটাতে পারে। ডিম একটা স্পঞ্জ এর মত এতে অনেক গুলো ছোট ফুটা থাকে যে কারনে এর আদ্রতা সহজে হারাই বা তারাতারি শুষ্ক হয়ে যাই। এর এব্যাপারে আর একটু বিস্তারিত বলা হয় তবে আশা করা যাই যে এই ধরেনের সমস্যার সমাধান পাওয়া যাবে।
Incubation এর শুরুতেই ভ্রুনের ম্রিতুঃ
ডিমের ভিতর ভ্রুনের সবচেয়ে আগে মৃত্যু ঘটে যখন উর্বরতা সনাক্ত করার জন্য ডিম ধরে দেখা হয়। এতে ডিমের উন্নয়ন বাধা প্রাপ্ত হয়। বা আগে উল্লেখিত স্বাভাবিক কারনে ডিমের উন্নয়ন শুরু হবার পর দুর্বল incubation এর জন্য। আর কিছু সম্ভাব্য কারন হিসাবে বলা যাই যে ভুল দরণের নীড় উপাদান, উকুন/মাইট এর কারনে কবুতর ক্রধে উম্মত্ত হয়ে পড়ে, খাঁচাই খামারির অতিরিক্ত হস্তক্ষেপ, ডিমের জন্য অপর্যাপ্ত বাটি প্রদানে বার্থতা, একই যাইগাই অনেক কবুতর গাদাগাদি করে রাখা, বৃদ্ধ বা অসুস্থ কবুতর একই সঙ্গে রাখা, অসমান বা বাকা ধরনের নেস্ত বাটি প্রদান, দুর্বল পিতামাতা, খুব গরম বা খুব ঠাণ্ডা পরিবেশ, অপর্যাপ্ত বায়ু চলাচল বাবস্থা, খামারে বহিরাগত পাখি বা আগন্তক এর মাধমে বিরক্ত হাওয়া। এছাড়াও আগেই বলা হয়েছে যে তা দেবার সময় প্রথম দিকে ডিমে কম্পন মত আঘাত,কম্পন বা ডিম ঝাঁকানো অথবা ডিম চালার সময় কুসুম পাইপ ফেটে গেলে সরাসরি উন্নয়ন ডিমে ভ্রুন মারা যেতে পারে। বজ্রপাত বা জোরে ঝড়বৃষ্টি,জিনগত এর অস্বাভাবিকতা ছাড়াও জিনগত প্রজনন সমস্যা দুর্ভাগ্য জনক মৃত্যুর সম্ভবনা বেশি।
দিন 4 থেকে অণ্ডস্ফুটন এর Day 14 মৃত্যুসহঃ
যদি মাদি দুর্বল হয় এবং তাকে নিয়মিত পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ না করা হয়,তাহলে পুষ্টিকর কুসুম উৎপাদন সম্ভব হয় না, আর এই পুষ্টিকর কুসুম ভ্রুন বাচ্চার অন্যতম খাদ্য, যা incubation এর সময় তারা পাই না। শুধু ডিম পাড়ার সময়ই পুষ্টিকর খাবার দিলে হবে না সারাবছর ব্রিডিং জোড়া কে এই ধরনের খাদ্য দিতে হবে।
incubation এর শেষে বাচ্চার মৃত্যুঃ
incubation বা তা এর মাধ্যমে একটি ভ্রুন মেমব্রেন বা ঝিল্লি খুব কাছাকাছি ডিমের ভিতর বিকাশ লাভ করে, এটি শেল এর মাধ্যমে diffuses ভ্রূণকে পর্যাপ্ত বায়ু সরবরাহ করে, একটি গর্ভফুল বা প্ল্যাসেন্টার মত কাজ করে। incubation বা তা শেষে ভ্রুন এ প্ল্যাসেন্টা থেকে শ্বাস নেয়, এটি দুই পর্যায়ে ঘটে, এটিকে প্রথমে অভ্যন্তরীণভাবে ডিম শেষে এয়ার চেম্বারের মধ্যে একটি ছোট গর্ত করে চ্চেম্বারের বাতাস থেকে শ্বাস নিতে শুরু করে। এই পর্যায়ে vibrations অনুভূত হতে পারে। অন্য 12-24 ঘন্টা পরে বাচ্চা তার শেল ভেঙ্গে বাইরের বাতাস থেকে নিঃশ্বাস নেয়। এই ঘটনা যদিও কুসুম SAC (অণ্ডস্ফুটন সময় পুষ্টি) এবং সর্বশেষ নাভির মধ্যে (এবং শেষ পর্যন্ত পাখি সমগ্র জীবন স্থায়ী হয় যা ক্ষুদ্রান্ত্র দেয়ালে একটি ক্ষুদ্র SAC হিসাবে থাকে)। এই সময় ভ্রুন এটি প্রায় পরিষ্কার তরল পানীয় amniotic তরল ছাড়াও কুসুম SAC এর মধ্যে জীবনের প্রথম কয়েক সপ্তাহের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে ভ্রুন এর জন্য অ্যান্টিবডি থাকে। এই সময় খুব উচ্চ বা নিম্ন তাপমাত্রা বা আর্দ্রতা বিরূপ ভ্রুঙ্কে প্রভাবিত করে। এই সমন্বয় শেল এবং শেল ঝিল্লি হার্ড এবং শুষ্ক হয়ে যায়। যদি এই সময় আদ্রতা না থাকলে dehydrated হয়ে সুস্থ ভ্রুন মারা যাই। এই ধরনের ক্ষেত্রে হালকা পানির ছিটা বা স্প্রে dehydrated থেকে নিরাপদ রাখে। প্রায়ই হ্যাচিং ১০% থেকে ২০% এইভাবে মৃত পাওয়া যায়। যদি কেও নিজে থেকে শেল থেকে সরানো হলে প্রায়ই তারা কুসুম sacs unabsorbed হয় না ফলে ডিমের মধ্যে শুষ্ক, gluggy albumen এখনও প্রায়ই থেকে যাই। এই সময় বাচ্চা মেম্ব্রেনে আটকিয়া যাই একে sticky chicks বলে। কারন অনেক সময় এই শুষ্ক শেল membranes এর কারনেও বাচ্চার মৃত্যু ঘটে থাকে। মূলত নীড় বক্স ২০-২৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং 70% একটি আর্দ্রতা থাকা উচিত। অবিশ্বাস্য বা আজগুবি মনে হলেও একটি থার্মোমিটার এবং hygrometer নীড় বক্সে স্থাপন করা ভাল।
সংক্ষেপে বলা যায়, অধিকাংশ lofts hatchability মধ্যে নাটকীয়ভাবে তিনটি সহজ ধাপ দ্বারা উন্নত করা যায়:
প্রজনন মাসের পূর্বে কবুতরের পুষ্টি উন্নতি করা।
প্রতিবার নীড় বক্স স্বাস্থ্যবিধির জন্য একটি ভাল নীড় বাটি সরবরাহ করা ।
হ্যাচিং সময় খামারের কাছাকাছে স্নান/ স্প্রে এর বাবস্থা করতে হবে।
আমার বিশ্বাস যে কেও যদি এই ব্যাপার গুলো একটু সতর্কভাবে নজরে আনেন আশাকরে তিনি অন্ততপক্ষে ১০০% সফল না হলেও ৮০% সফল হবেন, আর সেটাই বা কম কি? পরিশেষে বলতেই হয় যে এই লেখার কারনে যদি ১% খামারিও উপকৃত হন তবে আমার কষ্টকে সার্থক মনে করব। আর এই ভ্রুন মৃত্যুর দুঃখ আর সবার মত আমাকেও অনেক সময় বহন করতে হয়।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন